Trilochan Shahito Vubon - ত্রিলোচন সাহিত্য ভুবন v

নষ্ট মেয়ের নষ্ট ই মেল
- শর্মিষ্ঠা
 প্রাণের হারু,
খুব জরুরী খবর জানাতে এই আর্জেন্ট ই মেল। আমি গত তিনমাস পিরিয়ড মিস করেছি। গতকাল ঘরে প্রেগকালার টেস্ট করেছি। পজিটিভ। আজ ডাক্তারের কাছে গিয়ে কনফার্ম হব।
 তোকে এটাও জানাতে চাই যে, গত খ্রিস্টমাস ইভের রাত আমি আমার এপার্টমেন্টে আমার পঞ্চপান্ডবের সঙ্গে চুড়ান্ত যথেচ্ছাচারে কাটিয়েছি। পাঁচ পাঁচটি ভরাট যৌবন আমার চরণে পূজার অর্ঘের মত নিবেদিত হয়েছে আরাধ্যার প্রতি মুগ্ধতায়। তোর বাড়ির কারুর মত কেলেকুচ্ছিৎ বলে নাক সিঁটকোয় নি তারা। আর একজনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সে শুকনো মুখে মাথা নীচু করে দূরে সরে গেছে আমারই ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে। যে ভাবে একদিন আমাকে বাড়িতে একা পেয়ে তোর ভগিনীপতি গায়ের জোরে আমাকে কুটিকুটি করে ছিঁড়ে ফেলেছিল, এ দেশের মানুষগুলো বোধকরি স্বপ্নেও ভাবতে পারে না। আর সে দিনের পর আমার শরীরটাকে প্রতি দিনে রাতে যখন খুশি তুই আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ছিঁড়ে খেয়েছিস। নেশার ঘোরে একদিন আমাকে বহুগামিনী বেশ্যা বলতে বাধে নি তোর।
 হারু, তুই আমার সেই খিচুড়ির স্কুলের বন্ধু। সেই তখন থেকে যত রাজ্যের ভাললাগা, খারাপলাগা সব আমি আগে তোর সঙ্গে শেয়ার করেছি। রাস্তায় কোনও লোক কোনওদিন অসভ্যতা করেছে জানতে পারলে তুই চেপে যেতে বলেছিস। আমিও নতুন করে হ্যারাসমেন্টের ভয়ে সব চেপে গেছি। দোষের মধ্যে এইচ এসের পর আমি ইঞ্জিনিয়ারিং য়ে চান্স পেয়ে তোর মত লো প্রোফাইলকে পাত্তা না দিয়ে দেবজিৎকে ফিট করে ফেলি। সেই দেবজিৎ আমার ভার্জিনিটি নিয়ে আমায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আমার তখন পাগলের মত অবস্থা। কতকটা যেন দয়া করেই তুই আমার মত 'কেলেকিষ্টি মেয়েছেলে' কে বিয়ে করলি আমার বাবার কাছ থেকে প্রচুর নিয়ে। আবার মোটা মাইনের চাকরি পাওয়া মাত্র আমি, সেই কেলেকিষ্টি, একেবারে ও বাড়ির মেয়ে হয়ে গেলাম।
 হারু, গত দু মাস হল আমি তোকে ছেড়ে, দেশ ছেড়ে কোম্পানীর প্রোজেক্টের কাজে এই দূর বিদেশে। প্রথমবার মিস করার সময় দেশেই ছিলাম। এ কথা শুনে পাছে আটকাস, তাই চেপে গিয়েছিলাম।
 এ কথা হেয়াটসঅ্যাপে বললেও হত। এত বড় মেল অন্য কিছু বলতে।
 হারু, আমি আর এখান থেকে ফিরতে চাই না। স্বর্গ হোক বা নরক, বাকি জীবনটা এখানেই থেকে যেতে চাই। আমার রোজগারে কেনা নতুন ফ্ল্যাটটা তো তোর মায়ের নামে দলিল করে দিয়ে এসেছি। পেটেরটাকে যদি ক্লেম করিস, এক কথায় তোকে দিয়ে দেবো। (অবশ্য সে যদি আমার মত কালো মেয়ে হয়, কি হবে জানা নেই।) টাকার যখন যা দরকার বলিস, পাঠাবো। আর সম্পর্ক থেকে হাত ধুয়ে ফেলতে চাইলে কোর্টে যাস। মিউচুয়াল ডিভোর্স দিয়েই দেবো।
 সাবধানে থাকিস, তোর মা কে সুখবরটা দিয়ে দিস। আমার জন্য চিন্তা করে বিশেষ লাভ নেই। প্রমিস করছি এই অবস্থায় এ ক মাস কারুর সঙ্গে আর দুষ্টুমি করব না।
 ইতি
 তোর খুশি

No comments:

Post a Comment