Trilochan Shahito Vubon - ত্রিলোচন সাহিত্য ভুবন v

ধরণী, দ্বিধা হও
-শর্মিষ্ঠা
 উপদ্রুত অঞ্চলের যে কোনও মানুষই উগ্রবাদী। রাত থাকতে নদীর তীরে প্রাতঃকৃত্য সারতে আসা এই তরুণীও। দেশের স্বার্থে কৃতকর্মের শাস্তি তাকে পেতেই হবে।
"পাকড়ো উসসে। বানাও।" পুলিশ অফিসার অনিমেষ মজুমদারের নির্দেশে চারজন পুলিশ মেয়েটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
 অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন এই অঞ্চল বর্ষাকালে অত্যন্ত বিপদসঙ্কুল। গত রাতে ভারী বৃষ্টিও হয়েছে। তবু নারীমাংসের লোভ অজেয়। চারজন পুলিশ মেয়েটিকে এনে ফেলে কুমীরের হাঁ এর মত এই পাথরের গর্তে।
 ধর্ষণের সময় মেয়েমানুষ চিৎকার করবে, কাকুতিমিনতি করবে, প্রতিরোধের চেষ্টা করবে, মুখে ভয়ের অনুভূতি ফুটবে, তবে না ধর্ষণ উপভোগ্য হবে। এই মেয়েটি সম্পূর্ণ নীরব, ভাবলেশহীন। চোখদুটি অভিব্যক্তিহীন।
 এক এক করে চারজন। কাজ সেরে তারা যখন পোশাক পরছে, মজুমদারও চাইলেন একটু স্বাদ পেতে। কাজ সেরে প্রমাণ লোপ করতে মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে খুন। এরপর মুক্ত হয়ে পালাবেন, চরম মুহূর্তে হড়কা বান এসে সৃষ্টি ভাসিয়ে নিয়ে গেল। ভেসে যেতে যেতে একটা পাথরের খাঁজে আটকে বেঁচে গেলেন তিনি।
 কে জানে কতক্ষণ সংজ্ঞা হারিয়ে পড়েছিলেন। জ্ঞান ফিরল অনেক কন্ঠের কলরবে। থানা থেকে ওঁদের খুঁজতে খুঁজতে এসে পড়েছেন সহকর্মীরা। মেয়ের খোঁজে সমস্ত গ্রাম ভেঙে পড়েছে নদীর তীরে। গন্ধ পেয়ে ভীড় জমিয়েছেলাশে মিডিয়া। গতরাতের চারজন সহকারী নিখোঁজ। মূক বধির মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণীর লাশের শরীর থেকে ধর্ষণের সব চিহ্ন মুছে নিয়েছে দুরন্ত স্রোতস্বিনী। ঘন শৈবালদামে ঢেকে দিয়েছে তার লজ্জা।
 কিন্তু, তার বিস্ফারিত দুই চোখ, গলায় আঙুলের নীল দাগ সমবেত জনতার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে খুনের স্পষ্ট প্রমাণ। আর......
 ...... এত এত জোড়া চোখের সামনে........ তিনি...... সম্পূর্ণ রিক্ত বিবসন।

No comments:

Post a Comment