ত্রিলোচন সাহিত্য ভুবন v

 


লঙ্কা কান্ড

অঞ্জলি দে নন্দী, মম

আচারী লঙ্কা

বাজিয়ে ডঙ্কা

খুব চেঁচিয়ে বলে,

আমার দেহ সবচেয়ে শ্রেয়।

আমার মত আর নাই তো কেহ।

ওর বড়ই অহংকা'  .......


তা শুনে

মুখ খেঁচিয়ে বলে

ধানী লঙ্কা,

আমি সবচেয়ে বড় আমার গুণে!


জবরদস্ত ঝগড়া করে দুজনে......

লংকাদের কান্ড দেখেশুনে

মনে মনে মনে

ভাবে জিভ জীবন্ত, শান্ত.......

ক্যানো ওরা মেতেছে এ আত্ম রণে?

আমি ছাড়া ওরা তো ভ্রান্ত।

 ধোয়াসা

কলমে বানীব্রত 



মাঝরাতে ভাঙলো ঘুমের ঘোর

চারিদিকে অন্ধকার  তার মাঝে হঠাৎ 

রাতের বোবা ফোনটায় জ্বলে উঠলো আলো

তারপর তার রিং টোন।


ঘুমোঘোরে অলস হাতে ধরা গলায় 

বললাম  হ্যালো 

অনেক দিন পর তোমার গলাটা 

না,  চিন্তে ভুল হয়নি আমার।


সুদুর আমেরিকা থেকে তোমার হঠাৎ মনে পড়ল..... আমাকে।

এখন তোমার  সকাল আর আমার গভীর রাত

সময় ঘুরে কতগুলো বছর পার করেছে শুধু,

কোন একদিন ধুমকেতুর মতো এসেছিলে

চলেও গেলে ধুমকেতুর মতো। 


না বলে চলে গিয়েছিলে সেদিন, আবার কেন ধুমকেতুর আগমন?

 তুমি আমার গলাটাও চিনতে পারনি সে সময়

আমি বলার পর তোমার চেতনা ফিরল,

আনেক কিছু বলার ছিল আমার,  না বলতে পারিনি, 

তুমিও কিছু জানতে চাওনি। 

ফোনটা কেটে গিয়েছিল আর আসে নি,

না সেই রাতে আর ঘুম ও আসেনি আমার চোখে,

একটা  ধোয়াসা থেকে গেল কেনই বা ফোন করলে আবার কেনই বা হারিয়ে গেলে,

ধোয়াসাই থেকে গেলো ধোয়াসার অন্তরালে,

ভালো থাকার মিথ্যে আশ্বাশনে।

 জীবনের কথা 

পারভীন শীলা 


শ্রাবণের মেঘে ঢেকেছে আকাশ,

পৃথিবীর বুকে ঝরেছে 

ফুটন্ত শিউলি, 

জীবনের সব কথা-

সাগরের ও পারে ডুবে যাওয়া সূর্যটার মতোই। 

নদীর তরঙ্গে লেখা হয়ে যায়

ঝরে পড়া কিছু জীবনের কথা,

বুকের সবটুকু কষ্ট নীল আসমানে

ভেসে বেড়ায় মেঘ হয়ে,

তারপর উড়ে উড়ে পৃথিবীর পরে

ঝরে পড়ে কষ্টের লোনা জল,

আকাশের বুক থেকে তখন বৈরী হাওয়া

শাঁই শাঁই শব্দে ছুটে আসে

পৃথিবীর খোলা দরজার ভীতর দিয়ে,

এ পৃথিবী তখন ম্রিয়মাণ! 

বিধবার সাদা শাড়ীর মতোই ফ্যাকাশে 

মুখখানি তার 

দূর্বিষহ জীবনের কথা কয়।

 {কদম শিউলি স্তব্ধ}

            রাণু সরকার

======================

বেগবানে এলে সোহাগকে সাথে নিয়ে,

অঙ্গনা প্রণয়ীণীর কাছে অনুরাগের যৌতুকে

গভীর আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরবে!

আকাশ পথে দু'জনের ভ্রমণ কল্পনার ডানা মেলে উড়ে উড়ে!

সুদূর নীল নভস্থলে বলাকারা দেখবে আমাদে উড়ে চলা সোহাগ,

সোহাগের ছোঁয়ায় শিহরিত দু'টি শরীরের শিরায়-শিরায় রক্তের গভীরে আনন্দে কাব্য স্রোত বয়ে চলা!

সোহাগের সমুদ্রে ডুবে দু'জনে সোহাগের অবগাহনে অনাবৃত বুকে চুম্বন এঁকে রঙ ধুনুর সাত রঙে রাঙিয়ে দিলো শরীর!

উজ্বল নক্ষত্র অরুন্ধতী দীপ্যমান সোহাগের ভরা বর্ষায়!

গভীর সোহাগে দু'জন ভিজছে কদম গাছের ছায়ায়!

থরথর কাঁপছে দুটি শরীর গভীর সোহাগের আবেগে!

অঙ্গনা প্রণয়ীণী ও পলিতকেশের গভীর সোহাগ দেখে কদম শিউলি স্তব্ধ!!

{সীমাবদ্ধ দৃষ্টি}

রাণু সরকার

======================== 

কোনোদিন দেখিনি দূরে মেঘে ঢাকা আকাশ,

হয়তো এই জীবনে হবেনা দেখা;

ভোরে দেখবো বলে ঠিক করি, কুহেলীকায় ঢাকা থাকে-

আমার দৃষ্টি সীমাবদ্ধ অতো দূরে যায় না দৃষ্টি;

একা ভয় লাগে পা পিছলে যদি পড়ে যাই-

দেখতে চাই সহজপাচ্য রমণীয় সমুদ্রবাহু,

দেখালে বিশাল জলপ্রপাত দেখাতে হবে।

মধ্যবর্তী স্থানে নিয়ে দেখাতে হবে!

আমার দৃষ্টি কিন্তু সীমাবদ্ধ-

কলাকৌশলে অভিজ্ঞ দেখাতেই পারো;

দেখতে চাই দূরের গুপ্ত রহস্য!!

 প্রশ্ন 

রণজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায় 


এখন সময় করতলে দাঁড় করিয়ে রেখেছে গতিশীল চঞ্চল শহরটাকে  

ক্রমশ যেন ফুরিয়ে আসছে তার উৎসবের পরমায়ু

,দুধ , গঙ্গাজল, তুলসী গাছ শিয়রে তার দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলছে 

একতারা হারিয়েছে বাবাজী বাউল 

 দিশাহীন  যন্ত্রণায় গৃহিণীর ভালোবাসা কেমন উদাসিন ,চোখ তার ফ্যাকাসে 

অরন্যের গাছপালা মৌন চাপা কান্নায়

 নক্ষত্রগুলি ঝুলে পড়েছে সরস পৃথিবীর অভিমুখে

 কেঁপে কেঁপে উঠছে ধামসা মাদলের আওয়াজ অন্তরাত্মা কাঁদছে  কৌপিন হারানোর ভয়ে

 এতদিন মুঠো মুঠো আনন্দ ছড়াচ্ছিল পৃথিবী

 বাতাস খুঁজে বের করে আনছিল সুখ

তাও সমুদ্রগর্ভে বিলীন হচ্ছে সন্তাপে 

নিরুত্তাপ ছিল ক্ষুধাগ্নি

 কেন জানিনা কোন বেরসিক আকস্মিক বয়ে নিয়ে এলো এক আকাশ মুখভার করা কালো মেঘ স্বদেশ তথাপি নয় শৃঙ্খলা পরায়ণ

 নইলে কেন পাওয়া যায়না  প্রেমিক প্রেমিকার বিশুদ্ধ প্রেম 

কেন পাওয়া যায় না প্রকৃত দেশ প্রেমিক

 কেন পাওয়া যায় না দুঃখ দারিদ্র নেভানো আলো।  



প্রেমটা হয়তো সেদিন ছিল

সুবর্ণা কর্মকার

প্রেমটা হয়তো সেদিন ছিল

প্রেমটা হয়তো সেদিন ছিল, যেদিন তোর আঁখিতে আমার নামে শ্রাবণ ঝরেছিলো।

সে শ্রাবনে ভিজে ছিলাম আমি, তোর চোখের কালো দ্বীপে হদিশ খুঁজেছিলাম অবশেষে।

প্রেমটা হয়তো সেদিন ছিল,
যেদিন তোর ঠোঁটের মানচিত্রে দ্রাঘিমারেখা গুলো গুনে দেখতাম, 
তোর ভেজা চুলের সুবাসে নিজেকে সুগন্ধি করে তুলতাম।

আমার নিঃশ্বাস জুড়ে হয়তো এখন অখন্ড নীরবতা গোলাকার ধরণী জুড়ে রয়েছে শুধু তোর আগমনী,

প্রেমটা হয়তো সেদিন ছিল,
যেদিন তোর মায়াবী ছায়ার সুপ্ত অবসরে, ঘুমহীন ক্লান্তির ছাপ টা চুম্বনের আকারে মিলিয়ে দিতাম।

যেদিন তোর ঠোঁটের নিকোটিনের বিচ্ছুরিত ধোঁয়া টা অপেক্ষা করত আমার আগমনের জন্য।

আজ হইতো প্রেম টা রয়ে গেছে,
শুধু বদলে গেছে প্রেমের ধরন;
এখন তোর মুঠো মুঠো স্বপ্নের রাজ দরবারে
আর তো ঘটে না আমার নামে অভিস্রবণ।

এখন প্রেমটা শুধু আমার একার,

তুই তো ভুলে গেছিস এখন,
আমি এখন তোর কাছে কাঁটা যুক্ত ক্যাকটাসের ন্যায়,
্যস্ট্রেতে যেভাবে নিকোটিনের ছাই ফেলে অবশেষে।