কবিতা
"পিঠে"
অঞ্জলি দে নন্দী, মম
ঐরাবৎ হাতীর পিঠে
বসে নন্দী ষাঁড়ের নাতী।
যাচ্ছে খেতে সে
হরেক রকম পিঠে।
নামলো এসে
নানীর ঘরের শেষে।
নানা ভালোবেসে
ওর পিঠে
হাত চাপড়ায়, আদোরে।
আর বলে,
যুগ যুগ যুগ তুম জিও!
তাই না দেখে নৃত্য করে
নানার যত পোষা বাঁদরে।
নানী বানায়
নাতীর প্রিয়
তালের মিঠে পিঠে
নিজ করে। ( হাতে )
আহা, সুখে ভরা ভাদোরে,
নানা, নানীর নাতী আদোর করা,
এতেই তো ধরা গড়া।
নানীর হৃদয় মহাসাগরসম।
নাতীর তরে স্নেহ তার ভরা
কানায় কানায় কানায়।
নাতী থাকে নানার হার্ট বিটে।
ওদের সবার প্রিয় নাতীর মমও।
সোনা বন্ধু
রাণু সরকার
============
শোন কোকিলা-
ওপারেতে-সোনা বন্ধু আছে একেলা,
আমার কথা বলবি তাকে চিন্তা যেন না করে
ভালো আছি-কিন্তু তার জন্য মনটা আমার আনচান করে!
এই নে--চিঠি-সাবধানেতে পৌছে দিস
যদি বন্ধু আমার ঘুমিয়ে থাকে-জাগিয়ে তবেই তার হাতে দিস,
চিঠি পড়ে সোনা বন্ধুর জল আসবে চোখের কোলে-
ঠোঁটে করে খানিকটা জল আনবি তুলে!
বন্ধু আমার যাবার বেলায়-সোহাগ চিহ্ন এঁকে দিতে গেছে ভুলে!
ঠোঁটের থেকে একটু লালা আনবি তুলে!
আমার হয়ে এক কলি গান শুনিয়ে দিস
এই-কোকিলা কাজটা যদি করে দিস
আমার বাতাবি লেবুর গাছটি তুই নিয়ে নিস
মেঘেদের বেড়েছে-খুব আনাগোনা
কখন বর্ষাকে যে পাঠিয়ে দেবে-ওদের কথা বলা যায় না ।
বর্ষা যদি আসে ধেয়ে
পারবি কি তুই চিহ্ন গুলো আনতে বয়ে?
যতক্ষণ তুই না আসবি চিন্তা গুলো মাথায় আমার থাকবে ছেয়ে!
লঙ্কা কান্ড
অঞ্জলি দে নন্দী, মম
আচারী লঙ্কা
বাজিয়ে ডঙ্কা
খুব চেঁচিয়ে বলে,
আমার দেহ সবচেয়ে শ্রেয়।
আমার মত আর নাই তো কেহ।
ওর বড়ই অহংকা' .......
তা শুনে
মুখ খেঁচিয়ে বলে
ধানী লঙ্কা,
আমি সবচেয়ে বড় আমার গুণে!
জবরদস্ত ঝগড়া করে দুজনে......
লংকাদের কান্ড দেখেশুনে
মনে মনে মনে
ভাবে জিভ জীবন্ত, শান্ত.......
ক্যানো ওরা মেতেছে এ আত্ম রণে?
আমি ছাড়া ওরা তো ভ্রান্ত।
ধোয়াসা
কলমে বানীব্রত
মাঝরাতে ভাঙলো ঘুমের ঘোর
চারিদিকে অন্ধকার তার মাঝে হঠাৎ
রাতের বোবা ফোনটায় জ্বলে উঠলো আলো
তারপর তার রিং টোন।
ঘুমোঘোরে অলস হাতে ধরা গলায়
বললাম হ্যালো
অনেক দিন পর তোমার গলাটা
না, চিন্তে ভুল হয়নি আমার।
সুদুর আমেরিকা থেকে তোমার হঠাৎ মনে পড়ল..... আমাকে।
এখন তোমার সকাল আর আমার গভীর রাত
সময় ঘুরে কতগুলো বছর পার করেছে শুধু,
কোন একদিন ধুমকেতুর মতো এসেছিলে
চলেও গেলে ধুমকেতুর মতো।
না বলে চলে গিয়েছিলে সেদিন, আবার কেন ধুমকেতুর আগমন?
তুমি আমার গলাটাও চিনতে পারনি সে সময়
আমি বলার পর তোমার চেতনা ফিরল,
আনেক কিছু বলার ছিল আমার, না বলতে পারিনি,
তুমিও কিছু জানতে চাওনি।
ফোনটা কেটে গিয়েছিল আর আসে নি,
না সেই রাতে আর ঘুম ও আসেনি আমার চোখে,
একটা ধোয়াসা থেকে গেল কেনই বা ফোন করলে আবার কেনই বা হারিয়ে গেলে,
ধোয়াসাই থেকে গেলো ধোয়াসার অন্তরালে,
ভালো থাকার মিথ্যে আশ্বাশনে।
জীবনের কথা
পারভীন শীলা
শ্রাবণের মেঘে ঢেকেছে আকাশ,
পৃথিবীর বুকে ঝরেছে
ফুটন্ত শিউলি,
জীবনের সব কথা-
সাগরের ও পারে ডুবে যাওয়া সূর্যটার মতোই।
নদীর তরঙ্গে লেখা হয়ে যায়
ঝরে পড়া কিছু জীবনের কথা,
বুকের সবটুকু কষ্ট নীল আসমানে
ভেসে বেড়ায় মেঘ হয়ে,
তারপর উড়ে উড়ে পৃথিবীর পরে
ঝরে পড়ে কষ্টের লোনা জল,
আকাশের বুক থেকে তখন বৈরী হাওয়া
শাঁই শাঁই শব্দে ছুটে আসে
পৃথিবীর খোলা দরজার ভীতর দিয়ে,
এ পৃথিবী তখন ম্রিয়মাণ!
বিধবার সাদা শাড়ীর মতোই ফ্যাকাশে
মুখখানি তার
দূর্বিষহ জীবনের কথা কয়।
{কদম শিউলি স্তব্ধ}
রাণু সরকার
======================
বেগবানে এলে সোহাগকে সাথে নিয়ে,
অঙ্গনা প্রণয়ীণীর কাছে অনুরাগের যৌতুকে
গভীর আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরবে!
আকাশ পথে দু'জনের ভ্রমণ কল্পনার ডানা মেলে উড়ে উড়ে!
সুদূর নীল নভস্থলে বলাকারা দেখবে আমাদে উড়ে চলা সোহাগ,
সোহাগের ছোঁয়ায় শিহরিত দু'টি শরীরের শিরায়-শিরায় রক্তের গভীরে আনন্দে কাব্য স্রোত বয়ে চলা!
সোহাগের সমুদ্রে ডুবে দু'জনে সোহাগের অবগাহনে অনাবৃত বুকে চুম্বন এঁকে রঙ ধুনুর সাত রঙে রাঙিয়ে দিলো শরীর!
উজ্বল নক্ষত্র অরুন্ধতী দীপ্যমান সোহাগের ভরা বর্ষায়!
গভীর সোহাগে দু'জন ভিজছে কদম গাছের ছায়ায়!
থরথর কাঁপছে দুটি শরীর গভীর সোহাগের আবেগে!
অঙ্গনা প্রণয়ীণী ও পলিতকেশের গভীর সোহাগ দেখে কদম শিউলি স্তব্ধ!!