মেঘবালিকা ও স্বপ্ন
পারভীন শীলা
অন্ধকার রাত্রি, জঙ্গলের অচেনা পথ,
বালিকার বুকের মধ্যে
শঙ্কা!ভয়!কাঁপুনি!
হঠাৎ অন্য একটি হাতের স্পর্শ।
শক্ত হাতে ধরে কানে কানে বলছে,
ভয় নেই! আমি তো আছি!
ঘন বন, মাঝে মাঝে শেয়ালের হাঁক!
ক্ষুধার্ত বাঘ আর সিংহের গর্জন!
প্রশ্ন করতে ভুলে গেলো বালিকা
পাশে থাকা যুবকটিকে, তুমি কে?
কঠিন আলিঙ্গনে বেঁধে যুবকটি
ফিসফিস করে বললো,
চিনতে পারোনি আমায়?
যারে দেখতে পেলে তোমার সকল
ভয় কেঁটে যায়,
আমি সেই গো!
রাত পোহাবার অনেক বাকি,
আমার বুকে পড়ে থাকো,
বন্য পশু কেউ আসবে না!
ওরা জানে, তোমার আমার কথা।
অন্ধকারে মুখোমুখি এক অসহায় বালিকা
অন্তরে ভয়! শঙ্কা!
তা-ও প্রশ্ন করলো,
কী জানে ওরা, যা আমি জানিনে?
যুবকটি হেসে বলল,
ভুলে গেলে আমায়?
মনে পড়ে সেই বকুলের তলায়?
আসন পেতে ফুল কুড়াবার কথা?
মালা গেঁথে আমায় বলতে,
নিবে গো মালা? ভালোবাসার মালা?
আমি যত্ন করে মালাটি নিতাম,
তুমি হেসে লুটোপুটি খেতে,
তোমার ঐ চাঁদপানা মুখটিতে
আমার ভালোবাসার প্রলেপ বুলিয়ে দিতাম!
বালিকা অবাক বিস্ময়ে মুখ তুলে বলল,
কী বলছো তুমি! সে আবার কবেকার কথা!
জানিনাতো! মনে পড়ে না তো!
যুবকটি এবার নড়ে চড়ে ওঠে,
বলে, এইতো, এবার সব মনে পড়বে।
বলেই যুবকটি অদৃশ্য হয়ে যায়।
বালিকা চিৎকার করে ওঠে,
যেওনা! আমি একা এই বনে
কী করে থাকবো! কি পাষাণ তুমি!
এভাবে কি চলে যেতে হয়!
আমি চিনেছি তো!
তুমি আমার কল্পনায় আসো,
আবার চলে যাও!
এখনো তাই করছো?
যুবকটি আবার ফিরে এলো
বলল, হাতটি ধরো,
চলো তোমায় নিয়ে যাই।
বালিকা ঘুম কাতুরে কন্ঠে প্রশ্ন করলো,
কোথায়?
যুবকটি বলল,
তোমার মেঘ বালিকার দেশে।
বালিকার প্রশ্ন, তুমি যাবে না?
হ্যাঁ গো। যাবো বৈকি।
তোমার মেঘ বালিকার দেশ
সে তো আমার ও দেশ।
No comments:
Post a Comment